হাওজা নিউজ এজেন্সি: আসসালামু আলাইকুম, জনাব মুস্তাক আহমদ। আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমাদের বিশেষ সাক্ষাৎকারে।
মুস্তাক আহমেদ: ওয়ালাইকুম সালাম। ধন্যবাদ আমন্ত্রণের জন্য।
হাওজা নিউজ এজেন্সি: আজকের আলোচনার বিষয় হলো—ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সরাসরি সংঘাত। আপনার মতে, কী এমন কারণ তৈরি হলো, যার ফলে এই দুই দেশ অবশেষে মুখোমুখি যুদ্ধে জড়াতে বাধ্য হলো?
মুস্তাক আহমেদ: প্রশ্নটা অত্যন্ত সময়োপযোগী। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা নতুন নয়, তবে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়াটা বড় ধরনের কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত। এর পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি কাজ করেছে।
প্রথমত, প্রক্সি যুদ্ধ বহুদিন ধরেই চলছিল—ইসরায়েল সিরিয়া, লেবানন ও গাজায় ইরানের ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীগুলোর উপর হামলা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু এবার ইরান সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, যা বিশ্বের রাজনীতি'তে নতুন মাত্রা তৈরি করেছে।
হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইরানের সরাসরি জবাব দেওয়ার পেছনে কী বিশেষ কোনো ঘটনা দায়ী?
মুস্তাক আহমেদ: হ্যাঁ, সম্প্রতি দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের কুদস বাহিনীর কয়েকজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা নিহত হন। এটি ইরানের জন্য ছিল সরাসরি আক্রমণের সমতুল্য। ফলে রাজনৈতিক চাপ এবং ‘প্রতিরোধের বার্তা’ দেওয়ার জন্য ইরান সরাসরি হামলার পথ বেছে নেয়।
হাওজা নিউজ এজেন্সি: তাহলে কি বলা যায়, এটি প্রতিক্রিয়ার ধারাবাহিকতা?
মুস্তাক আহমেদ: অবশ্যই। এটা প্রতিক্রিয়া, তবে কৌশলগত বার্তাও। ইরান শত্রুকে বোঝাতে চেয়েছে, তারা শুধু প্রতিরক্ষামূলক নয়, প্রয়োজনে আক্রমণাত্মক পথেও যেতে পারে। পাশাপাশি আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে ইসরায়েলকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত করে তারা ‘রেড লাইন’ স্থাপন করতে চায়।
হাওজা নিউজ এজেন্সি: এ সংঘাত কি বড় আকার ধারণ করতে পারে?
মুস্তাক আহমেদ: এখানেই উদ্বেগের জায়গা। যদিও উভয় পক্ষই এখনো পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে না গিয়ে ‘নিয়ন্ত্রিত প্রতিক্রিয়া’র পথ নিচ্ছে, তবে কোনো ভুল হিসাব বা অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতিকে দ্রুত বিস্ফোরণোন্মুখ করে তুলতে পারে।
হাওজা নিউজ এজেন্সি: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে বিষয়টি দেখছে?
মুস্তাক আহমেদ: আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে থাকলেও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ চায় না। চীন ও রাশিয়া তাদের স্বার্থে মধ্যস্থতা করতে চায়। জাতিসংঘ বারবার উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। তবুও মূল ভূমিকা রাখতে হবে দুই পক্ষকেই।
হাওজা নিউজ এজেন্সি: শেষ প্রশ্ন—এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে বলে আপনি মনে করছেন?
মুস্তাক আহমেদ: ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে কূটনৈতিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমীকরণের উপর। যদি দুই দেশই সামরিক কৌশলের চেয়ে কূটনীতিকে অগ্রাধিকার দেয়, তাহলে উত্তেজনা কমানো সম্ভব। তবে আশঙ্কা থেকেই যায়, কারণ পুরো অঞ্চল এখনো বারুদের স্তূপ। তবে এটা দিনের আলোর মত পরিস্কার যে, দখলদার ইজরাঈল ধ্বংসের দ্বার প্রান্থে পৌঁছে গেছে৷ ফেরাউন, নমরুদ'রাও একসময় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ৷ সময় কথা বলবে৷
হাওজা নিউজ এজেন্সি: জনাব মুস্তাক আহমেদ, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য। আপনার বিশ্লেষণ আমাদের অনেক ভাবনার খোরাক দিল।
মুস্তাক আহমেদ: আপনাকেও ধন্যবাদ। এমন আলোচনার মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি হোক, সেটাই কামনা করি।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মজিদুল ইসলাম শাহ
আপনার কমেন্ট